ঢাকা, বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৮ ১৪৩১

তারেকের স্বেচ্ছাচারিতা : তৃণমূল খুশি, বিক্ষুব্ধ কেন্দ্রীয় নেতারা

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:০৬, ২৯ জুন ২০২৪  

তারেকের স্বেচ্ছাচারিতা : তৃণমূল খুশি, বিক্ষুব্ধ কেন্দ্রীয় নেতারা

তারেকের স্বেচ্ছাচারিতা : তৃণমূল খুশি, বিক্ষুব্ধ কেন্দ্রীয় নেতারা

লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার স্বেচ্ছাচারিতা এখন চরম আকার ধারণ করেছে। তিনি বিএনপির কোন নেতাকে পাত্তা দিচ্ছেন না। কারও সাথে কথা বলছেন না। এককভাবে সমস্ত সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। আর এই সমস্ত সিদ্ধান্তের কারণে বিএনপির সিনিয়র নেতারা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। যে কোন সময় বিএনপিতে বড় ধরনের বিদ্রোহের সঙ্কট দেখা দিতে পারে বলে কেউ কেউ মনে করছেন। 

তবে বিএনপির তৃণমূলের নেতারা এতে খুশি। হঠাৎ করেই তৃণমূলের মধ্যে চাঙ্গা ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে রুহুল কবির রিজভী বিএনপির লাইম লাইটে আসার পর বিএনপিতে কর্মীদের মধ্যে এক ধরনের উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আর এর ফলে বিএনপিতে কর্মীদের সঙ্গে মুখোমুখি অবস্থানে চলে গেছে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। 

বিএনপির তৃণমূলের কর্মীরা মনে করেন যে, ঢাকায় যে সমস্ত নেতারা আছেন, তাদের ব্যর্থতার কারণেই বিএনপি মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না এবং তাদের সঙ্গে সরকারের গোপন যোগসাজোশ রয়েছে। এ কারণে তারা আন্দোলনকে ভুল পথে পরিচালিত করছেন। আর যে সমস্ত নেতারা নিষ্ক্রিয় তাদেরকে দলীয় পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবিও করছেন তৃণমূলের নেতৃবৃন্দ। আর এই ডাকে সাড়া দিয়েছেন লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক। 

জিয়ার রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দলের ভেতরে নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্যই তারেক জিয়া এখন তৃণমূলের দাবি দাবিগুলোকে আমলে নিচ্ছেন। আর এ কারণেই বিএনপিতে এই পরিবর্তনগুলো হচ্ছে। তবে বিএনপির শীর্ষ নেতাদেরকে বাদ দিয়ে এ ভাবে দলের ভেতর সংস্কার এবং উল্ট পাল্ট করার পরিণাম ভয়াবহ হবে বলে মনে করছেন বিএনপির কোনো কোনো নেতা। 

বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে অন্তত দুইজন বলেছেন, যেভাবে এখন বিএনপি চলছে, কোন রাজনৈতিক দল এভাবে চলতে পারে না। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখন রুটিন কাজের মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ রেখেছেন। তিনি দলীয় কোন কর্মসূচিতে আগ্রহী নন। নতুন কর্মসূচির পরিকল্পনাও ঠিকঠাক মতো হচ্ছে না। দলের নেতৃবৃন্দের মধ্যে আলাপ আলোচনা নাই। মির্জা আব্বাস দলীয় সমস্ত কর্মকাণ্ড থেকে ঈদের পর থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিশেষ করে ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণ মহানগর আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্তির পর থেকে তিনি দলীয় কর্মকাণ্ডে নিষ্ক্রিয়। 

দলের আরেক নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কেও খুব একটা তৎপর দেখা যাচ্ছে না। নজরুল ইসলাম খান নিজেকে অসুস্থ ঘোষণা দিয়ে ঘরে বসে আছেন। আর ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ সত্যি সত্যিই অসুস্থ। তারা দলীয় কর্মকাণ্ডে নেই। ঢাকা মহানগরের উত্তর এবং দক্ষিণ আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর একটি বিশাল অংশ নিজেদেরকে নিষ্ক্রিয় করে রেখেছেন। এই বাস্তবতার বিএনপিতে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো কোন অবস্থান নাই। বিএনপির নেতারাই বলছেন, যেসমস্ত তৃণমূলের নেতৃবৃন্দ রুহুল কবির রিজভীর প্রশংসায় এখন পঞ্চমুখ, তারা ভুল করছেন। তারা জানেন না যে, জাতীয় পর্যায়ে বিএনপির মতো একটি বড় দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো সক্ষমতা বা যোগ্যতা এখনও রিজভী অর্জন করতে পারেননি। আর এ কারণে রিজভীকে যদি মহাসচিব করা হয় তাহলে বিএনপির সর্বনাশ হবে বলেই অনেকে মনে করছেন। তবে সবকিছু ছাপিয়ে বিএনপির মধ্যে এখন স্থানীয় তৃণমূলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের বিরোধ প্রকাশ্য হয়েছে। আর এই বিরোধ উস্কে দিচ্ছেন তারেক জিয়া নিজে। বিএনপির নেতারা মনে করছেন, তারেক জিয়া তৃণমূলের সাথে নেতৃবৃন্দের সাথে বিরোধ লাগিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের চাপে রাখার কৌশল গ্রহণ করেছেন। এখন দেখার বিষয় এই কৌশল কতটুকু সফল হয়।

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়