ঢাকা, বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৮ ১৪৩১

ডায়াবেটিস ও ফ্যাটি লিভার

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:০৪, ২৫ জুন ২০২৪  

ডায়াবেটিস ও ফ্যাটি লিভার

ডায়াবেটিস ও ফ্যাটি লিভার

বিপাকীয় কর্মহীনতা সম্পর্কিত ফ্যাটি লিভার রোগ (গঅঋখউ) এবং ডায়াবেটিসের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। গঅঋখউ হলো একটি লিভারের রোগ, যা প্রধানত অতিরিক্ত চর্বি জমার কারণে হয় এবং এটি প্রায়ই টাইপ ২ ডায়াবেটিসের সঙ্গে সম্পর্কিত।
বিপাকীয় কর্মহীনতা সম্পর্কিত ফ্যাটি লিভার রোগ (গঅঋখউ) এবং ডায়াবেটিসের সম্পর্ক
ইনসুলিন প্রতিরোধ (ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স): গঅঋখউ এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের উভয়ের ক্ষেত্রেই সাধারণ কারণ হলো ইনসুলিন প্রতিরোধ। ইনসুলিন প্রতিরোধের ফলে শরীর ইনসুলিন ঠিকমত ব্যবহার করতে পারে না, যার ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। এটি লিভারের ফ্যাট জমার কারণে হতে পারে এবং গঅঋখউ সৃষ্টি করতে পারে।
দৈহিক স্থূলতা: স্থূলতা গঅঋখউ এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। অতিরিক্ত ওজন এবং বিশেষ করে পেটের চর্বি ইনসুলিন প্রতিরোধের ঝুঁকি বাড়ায়, যা উভয় রোগের কারণ হতে পারে।
বিপাকীয় সমস্যামালা (মেটাবলিক সিন্ড্রোম): এটি একটি অবস্থা যেখানে উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ ট্রাইগ্লিসারাইড, নি¤œ ঐউখ কোলেস্টেরল এবং উচ্চ রক্ত শর্করার মতো বিভিন্ন বিপাকীয় সমস্যার সমন্বয় ঘটে। এই সিনড্রোম গঅঋখউ এবং ডায়াবেটিস উভয়ের ঝুঁকি বাড়ায়।
বিপাকীয় কর্মহীনতা সম্পর্কিত ফ্যাটি লিভার রোগ এবং ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনা
ওজন কমানো: ওজন কমানো গঅঋখউ এবং ডায়াবেটিস উভয়ের ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস :  কম কার্বোহাইড্রেট এবং কম ফ্যাটযুক্ত ডায়েট : প্রক্রিয়াজাত এবং উচ্চ-ক্যালোরিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা।
বেশি ফাইবারযুক্ত খাবার : শাকসবজি, ফলমূল, পুরো শস্য এবং শিমজাতীয় খাবার গ্রহণ করা।
গ্লাইকেমিক ইনডেক্স কম খাবার : যা রক্তে শর্করার স্তর ধীরে ধীরে বাড়ায়।
নিয়মিত ব্যায়াম : 
- এ্যারোবিক এক্সারসাইজ: যেমন- হাঁটা, সাইক্লিং, সাঁতার, যা রক্তে শর্করার স্তর নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- রেজিস্ট্যান্স ট্রেনিং: যা ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ :
 - মেডিকেশন : ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ গ্রহণ করা।
-  রক্তের শর্করা পর্যবেক্ষণ : নিয়মিত রক্তের শর্করার স্তর পরীক্ষা করা।
জীবনযাত্রার পরিবর্তন :
- ধূমপান এবং অ্যালকোহল : ধূমপান পরিহার করা এবং অ্যালকোহল সীমিত করা।
- পর্যাপ্ত ঘুম : নিয়মিত এবং পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা।
চিকিৎসা পরামর্শ:
- নিয়মিত লিভার ফাংশন টেস্ট : লিভারের কার্যক্রম নিয়মিত পরীক্ষা করা।
- চিকিৎসকের পরামর্শ : চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক চিকিৎসা নেওয়া।
গঅঋখউ এবং ডায়াবেটিস উভয়ের ব্যবস্থাপনার জন্য একটি সম্মিলিত এবং সামগ্রিক পদ্ধতি গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক সময়ে এবং সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করলে রোগের অগ্রগতি রোধ করা এবং স্বাস্থ্যের উন্নতি সম্ভব।

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক 
এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়
হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ

সর্বশেষ
জনপ্রিয়